Sunday, November 2, 2014

কিভাবে লিখবেন কার্যকরী CV ?

       
             চাকরি বা অন্য কাজে CV' র প্রচলন অনেক আগে থেকেই। তবে এর গুরুত্ত কিন্তু এতটুকু কমেনি। একটি ভাল চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ভাল একটি CV খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। অনেক সময়ই দেখা যায় যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ মনমত চাকরি বা কাজ পান না। তিনি হয়ত জানেনও না কি কারণে তিনি কাজ/চাকরিটি পেলেন না। দেখা যাবে হয়ত তার CV টি সেরকম ভাল মানের না, অথবা সেটি তিনি কারও থেকে চুরি বা কপি করেছেন। এই বিষয় গুলো একজন চাকরিদাতাকে বিরক্ত করে এবং ফলাফলস্বরূপ চাকরিপ্রার্থী হারান একটি সুবর্ণ সুযোগ।
এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি ? কিভাবে লিখবেন অনন্য এক CV ?

CV আসলে কি ?

কার্যকরী একটি CV লিখার আগে সিভি সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা দরকার। CV হচ্ছে একজন মানুষের শিক্ষাগত এবং পেশা সম্পর্কিত যোগ্যতার সংক্ষিপ্ত ( ক্ষেত্র বিশেষে বর্ণনামূলক) বিবরণ। একে অনেকসময় জীবনবৃত্তান্ত ও বলা হয়। কোন কিছুর জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে সিভি সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়। এর মাধ্যমে আপনি সবচেয়ে ভালোভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন। একটি ভাল সিভি থেকে কোন মানুষের যোগ্যতা এবং দক্ষতার মোটামুটি ভাল ধারণা পাওয়া যায়। 



CV' র গুরুত্বপূর্ণ দিকঃ
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো একজন চাকরিদাতা কতটা গুরুত্তের সাথে দেখেন।
পূর্ববর্তী সম্পর্কিত কাজের অভিজ্ঞতা
৪৫%
যোগ্যতা এবং দক্ষতা
৩৫%
সহজ ভাষা
২৫%
সম্পন্নকৃত কাজ
১৬%
বানান এবং ব্যকরণ
১৪%
শিক্ষাগত যোগ্যতা
৯%
স্পষ্টতা
৯%
সঠিক উদ্দেশ্য
৩%
মূল শব্দের ব্যবহার
২%
যোগাযোগের তথ্য
১%
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
১%
কম্পিউটারে দক্ষতা
১%

সিভি লিখার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনঃ
    ১. সিভির সাথে একটি কভার লেটার যুক্ত করুন।
    ২. যতটা সম্ভব পরিস্কার রাখুন, গুরুত্বপূর্ণ বুঝাতে বোল্ড এবং ইটালিক ফন্ট ব্যবহার করুন।
    ৩. সিভি সংক্ষিপ্ত রাখার চেষ্টা করুন। এত বড় সিভি লিখবেন না যেটা পড়তে পড়তে কেউ বিরক্ত হয়ে পড়ে।     কতগুলো পরীক্ষা দিয়েছেন, কত নাম্বার পেয়েছেন সব বিস্তারিত উল্লেখ করার দরকার নেই। অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখবেন না। মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ পদে আবেদনের সময় দৌড় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা লিখাটা বোকামি।   এসব বিষয় এড়িয়ে যান। কাজের বা পদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়গুলোই হাইলাইট করুন। 
    ৪. আপনার শক্তিশালী দক্ষতার বা অর্জনের উল্লেখ করতে পারেন। এতে করে চাকরিদাতা আপনার সর্বোচ্চ ক্ষমতা   সম্পর্কে ধারণা পাবে। 
    ৫. সৎ থাকুন। নিজের যোগ্যতা বা অন্য কিছু বাড়িয়ে লিখবেন না।
    ৬. সিভির প্রথম পাতা সাধারনত সবচেয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়। তাই প্রথম পাতাকে বেশি গুরুত্ব দিন। চেষ্টা করুন এখানেই চাকরিদাতাকে আকৃষ্ট করতে। 
    ৭. বানান এবং ব্যকরণের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। ভুল বানান এবং ব্যকরণে লিখা সিভি দিয়ে চাকরি না পাওয়ার সম্ভাবনা  ৯৯% ।
    ৮. কারও CV সরাসরি কপি করবেন না। ধারণা নিতে পারেন, তবে নিজের মত করে গুছিয়ে লিখতে চেষ্টা করবেন।
    ৯. যেই পদের জন্য আবেদন করছেন সেই পদ এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালভাবে খোঁজখবর নিন।
    ১০.  রেফারেন্স যুক্ত করুন।
    ১১. আগের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে পারেন, সেখানে আপনি কি করতেন তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া যেতে পারে।
    ১২. কাজ সম্পর্কিত বাড়তি কোন দক্ষতা থাকলে যুক্ত করুন।
    ১৩. সঠিক ঠিকানা দিন।  
    ১৪. আপনার শখ এবং পছন্দের বিষয় উল্লেখ করুন। 

ভুলেও যা করবেন নাঃ
     ১. যোগ্যতা না থাকলে আবেদন করবেন না।
     ২. অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তিগত তথ্য দিবেন না।
     ৩. পূর্বের কাজের পর বিরতির (বেকার বা অন্য অবস্থা) সময় কি করেছেন তার উল্লেখ না করা।
     ৪. পূর্বের কর্মস্থল সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।
     ৫. এক CV বেশিদিন ব্যবহার করবেন না।
     ৬. সব জায়গায় এক CV ব্যবহার করবেন না।


সর্বোপরি, সিভি নিয়ে ভালমত গবেষণা করুন। অন্যের সিভি দেখুন, অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন। এগিয়ে যান আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। 

No comments:

Post a Comment